ওঝা –সাজা
-পাপিয়া ঘোষ সিংহ
মেহেপুর গঞ্জের বামাপদ লেট,
জটাধারী, দেবাংশী পায় নানা ভেট।
গ্রামের প্রান্তে তার আশ্রম খানি,
দশগ্রাম হ’তে লোক আসে ওঝা মানি।
কেউ আসে সাপে কাটা, কেউ বর ছাড়া,
কেউ আসে পুত্রশোকে হয়ে দিশেহারা।
সবের ওষুধ জানা, অশিক্ষিত বামার,
দেবাংশী নামে চলে বাণিজ্য- বাহার।
মরার মাথা আর শিকড়- বাকড়,
ভূতে পেলে পিঠে মারে ঝাঁটার চাপড়।
বামাপদর এক ছেলে মহাদেব নাম,
পিতার সহায়ক হয়ে চালায় এই কাম।
সাপে কাটা মূমূর্ষু রোগী বেঁচে যায়,
চারিদিকে দেবাংশীর নাম ছড়ায়।
বিষধর সাপ নিয়ে রোজ তারা খেলে,
মন্ত্রতন্ত্রের কেরামতি দেখায় কেউ গেলে।
এহেন মহাদেবে কাটিল সাপেতে,
সবাই বলে যাও ডাক্তার দেখাতে।
পিতা ক’ন না’ কোনো ডাক্তার-বদ্যি নয়,
ওঝা আমি ,ঝাড়ফুঁকের দেখাবোই জয়।
তিনদিন, তিনরাত চলে ঝাড়া, জলঢালা,
বৃথা গেল মন্ত্রতন্ত্র, বিষে নীল মুখ ও গলা।
দেহ পচে, গন্ধ ওঠে, মৃত মহাদেব ওঝা,
অশিক্ষা, কুসংস্কারের- এটাই হয় সাজা।।